উপজাতীয় মানুষজন



চাকমা:
উপজাতিদের মধ্যে সংখ্যায় সবচেয়ে বেশী আছে চাকমা। চাকমারা উত্তর-পূর্ব ভারতে, বার্মার পশ্চিমে, চীনে, উত্তর আমেরিকা এবং ইউরোপে ছড়িয়ে আছে। 

মারমা:
উপজাতিদের মধ্যে সংখ্যায় দ্বিতীয় জাতিগোষ্ঠি হলো মারমা। তারা বছরে অনেকগুলো ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করে তার মধ্যে সাংরাই তাদের বড় অনুষ্ঠান। এটি তাদের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। তারা এই অনুষ্ঠানে পানি খেলার আয়োজন করে। তারা বিশ্বাস করে পানি বিশুদ্ধতার প্রতীক এবং পানি তাদের সকল দু:খ ধুয়ে নিয়ে যাবে ও তাদের আত্মাকে পবিত্র করবে। তাদের নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি, খাদ্য, পোশাক রয়েছে।


ম্রো বা মুরং:
ম্রোরা সাধারণত প্রকৃতি পুজারি হলেও এখন অধিকাংশই বৌদ্ধ ধর্ম অনুসারী। তবে দুই-তিন বছর আগে ম্রোদের মধ্যে ‘ক্রামা’ নামে নতুন ধর্ম আসার পরে এখন অনেকে এই ধর্ম পালন করে। এদের সমাজ ব্যবস্থা পিতৃ প্রধান।
কিম নামে তাদের বানানো নিজস্ব এক ধরণের ঘরে এরা বাস করে। গ্রামের একজন কার্বারী (চেয়ারম্যানের মতো) থাকে। পুরুষের পাশাপাশি মেয়েরাও জুমচাষ করতে পারে।



খাসিয়া:
খাসি হচ্ছে খাসিয়াদের মাতৃভাষা। আগে তাদের ভাষা ছিল শুধুমাত্র কথ্য। থমাস জনস নামের ইউরোপিয়ান মিশনারির এক ব্যক্তি ভাষাটিকে রোমান লিপিতে অনুবাদ করে।
কা নিয়াম খাসি এবং কা নিয়াম ট্রি নামের একটি উপজাতীয় ধর্ম তারা পালন করে।
তাদের বিশ্বাস মুরগী পুরুষদের পাপ বহন করে এবং তাকে জবাই করলে পুরুষরা মুক্তি পায়। খাসিয়ারা মূলত মাতৃপ্রধান।




গারো:
গারোরা সাধারণত মাতৃপ্রধান। গারোরা সূর্য, গাছ, পানি, নদী, অগ্নির উপাসনা করে। তারা জুম চাষের উপর নির্ভরশীল।



মণিপুরী:
ভাষাগত এবং ধর্মীয় । ভিন্নতার কারণে বাংলাদেশের মণিপুরীরা তিনটি শাখায় বিভক্ত, যথা- মৈতৈ, পাঙন এবং বিষ্ণুপ্রিয়া।
মণিপুরীদের সংস্কৃতি খুবই সমৃদ্ধ ও ঐতিহ্যবাহী। মণিপুরী নৃত্য বিশ্বব্যাপী খুবই জনপ্রিয়। 



ত্রিপুরা:
ত্রিপুরাদের ভাষার নাম 'ককবরক'। তারা মূলত হিন্দু ধর্মের অনুসারী। কিন্তু এখন অনেকেই খ্রিষ্টান ধর্ম পালন করে।




তঞ্চংগ্যা:


তঞ্চংগ্যাদের ঐতিহ্যবাহী আকর্ষণীয় পোশাক রয়েছে। পাহাড়ি নারীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পোশাক-পরিচ্ছদ ও অলংকার পরিধান করে তঞ্চংগ্যা নারীরা। ভিন্নধর্মী পোশাকের কারণে তারা অন্যদের চেয়ে আলাদা। সাত রংয়ের পিনুইন বা পিনন নামের পোশাক পড়ে এরা।
অলংকার ব্যবহারের দিক থেকেও তারা অনন্য। কানে রাজ্জু ও ঝংকা, কবজিতে বাঘোর, কুচিখারু, বাহুতে তাজ্জুর, গলায় চন্দ্রাহার, হাচুুুলি, সিকছড়া ইত্যাদি। এগুলো সাধারণত রুপা দিয়ে তৈরী।



ম্রো:
মুরং সম্প্রদায় সাধারণত প্রকৃতি পুজারী। তারা পুন:জন্মে বিশ্বাস করে না। এদের নির্দিষ্ট কোন ধর্মগ্রন্থ নেই। গো-হত্যাকে তারা ধর্মীয় অনুষ্ঠান হিসেবে জুমের ফসল ঘরে তোলার আগে মহাধুমধামের সাথে পালন করে। 
কারও অসুখ হলে তারা ‘চিয়া-চট-প্লাই’ পালনের মানত করে। আরেকটি উৎসব তারা পালন করে থাকে সেটা হচ্ছে চাম্পুয়া”। সৃষ্টিকর্তা তাদের ধর্মীয় বিধান কলাপাতায় লিখেছিল বিশ্বাসে তারা কলাপাতা কেটে এ উৎসব পালন করে। এ সম্প্রদায়ের অনেকে আবার ‘‘ক্রামা’’ নামের একটি ধর্ম মতেও বিশ্বাস করে থাকে। মুরুং সম্প্রদায়ের কোন লোকের মৃত্যু হলে মৃতদেহ এক সপ্তাহ পর্যন্ত ঘরের মধ্যে রাখা হয়। 
মৃত ব্যক্তির নিকটে মুরগি, ছাগল ও শুকর জবাই করে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখা হয়। গান বাজনা ও নৃত্য পরিবেশনের মাধ্যমে মৃতকে নদীর তীরের কাছের চিতায় দাহ করা হয়।




































মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

বান্দরবান ভ্রমণ পরিকল্পনা

পৃথিবীর রহস্যময় পাহাড়গুলো